নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে ও ভারতে চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় গত চার-পাঁচ দিন থেকে সিলেটে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। প্রায় সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। ফলে জেলায় তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এখনও সিলেটের ৮৮টি পৌরসভা ও ইউনিয়নের ৯৯৪ গ্রামের ৫ লাখ ২১ হাজার ৯৭ জন এই বন্যায় আক্রান্ত রয়েছেন। ৬৫১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত থাকলেও ২০৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও ৮ হাজার ৯৬৫ জন মানুষ আছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সামান্য পরিমাণ বৃষ্টিপাত হলেও রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়া। পাশাপাশি ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে সিলেটের সবকটি নদ-নদীর পানি কমছে। তবে যেহেতু বর্ষাকাল, তাই বৃষ্টিপাত বেড়ে ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে যেকোনো সময় নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির পর প্রণোদনা সুবিধা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে আমন চাষের জন্য ভাসমান বীজতলা তৈরিসহ ক্ষতি কাটাতে নানা পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে, বন্যার মধ্যেই সিলেটে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। গত ৯ জুলাই সকাল ১০টা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। সিলেটের অনেক কেন্দ্রে এখনও পানি মাড়িয়ে পরীক্ষায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের সুবিধায় কাদামাটিতে বালি ফেলে প্রবেশদ্বারে খানিকটা সুবিধা করার চেষ্টা করেছেন। তবে বোর্ডের অনেক কেন্দ্রে এভাবে বন্যার পানি মাড়িয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন পরীক্ষার্থীরা।
এর আগে ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হন। এরপর গত ১৭ জুন ঈদুল আজহার দিন থেকে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন সিলেটের ১৩টি উপজেলার ১০ লাখের ওপরে মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হন। এই রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১ জুলাই থেকে আবারও সিলেট ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে চলমান বৃষ্টিপাতের কারণে সব নদ-নদীর পানি বেড়ে জেলায় তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
Leave a Reply